চিরেকোঠার সেপাই- আক্তারউজ্জামান ইলিয়াস

 আখতারুজ্জামান ইলিয়াস.jpg

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
জন্ম
আখতারুজ্জামান মোহাম্মদ ইলিয়াস

১২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৩
গোটিয়া গ্রাম (তাঁর নানা বাড়িতে), সাঘাটা উপজেলাগাইবান্ধা জেলাবাংলাদেশ। তাঁর দাদার বাড়ি ও বাবার বাসস্থান বগুড়া জেলা শহর এর চেলোপাড়ায়। তাঁর বাবা বি.এম. ইলিয়াস ছিলেন একজন স্বনামধন্য ও ধনাঢ্য ব্যক্তিত্ব। তিনি বগুড়া থেকে পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (১৯৪৭-১৯৫৩) ছিলেন।
মৃত্যু৪ জানুয়ারি ১৯৯৭ (বয়স ৫৩)
জাতীয়তাবাংলাদেশী
অন্যান্য নামমঞ্জু
নাগরিকত্ববাংলাদেশ Flag of Bangladesh.svg
মাতৃশিক্ষায়তনবগুড়া জিলা স্কুলঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাশিক্ষক
প্রতিষ্ঠানজগন্নাথ কলেজ
ঢাকা কলেজ
পরিচিতির কারণঔপন্যাসিক
ছোটগল্পকার
উল্লেখযোগ্য কর্ম
চিলেকোঠার সেপাই
খোয়াবনামা
পুরস্কারবাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮৩)
একুশে পদক (১৯৯৯)

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

আখতারুজ্জামান মোহাম্মদ ইলিয়াস ১৯৪৩ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলার গোটিয়া গ্রামে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম মঞ্জু। তার পৈতৃক বাড়ি বগুড়া জেলায়। তার বাবা বদিউজ্জামান মোহাম্মদ ইলিয়াস পূর্ব বাংলা প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (১৯৪৭-১৯৫৩) এবং মুসলিম লীগে পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি ছিলেন।[১] তার মায়ের নাম বেগম মরিয়ম ইলিয়াস। আখতারুজ্জামান বগুড়া জিলা স্কুল থেকে ১৯৫৮ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষা এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৬০ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেন (১৯৬৪)।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

আখতারুজ্জামান মোহাম্মদ ইলিয়াসের কর্মজীবন শুরু হয় জগন্নাথ কলেজে প্রভাষক পদে যোগদানের মাধ্যমে। এরপর তিনি মিউজিক কলেজের উপাধ্যক্ষ, প্রাইমারি শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরিচালক, ঢাকা কলেজের বাংলার প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মফিজউদ্দিন শিক্ষা কমিশনের সদস্য ছিলেন। ১৯৭৩ সালে তিনি বিয়ে করেন। তার স্ত্রীর নাম সুরাইয়া তুতুল। মুক্তিযুদ্ধের সময় পরিচিত মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দেন, গোপনে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। তার লেখা প্রতিশোধ, অন্য ঘরে অন্য স্বর, খোঁয়ারি, মিলির হাতে স্টেনগান, অপঘাত, জাল স্বপ্ন স্বপ্নের জাল, রেইনকোট প্রভৃতি গল্পে পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধপরবর্তী রাজনৈতিক এবং সামাজিক বাস্তবতা। ১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠিত হলেও সরকারি কলেজের শিক্ষক হিসেবে বাকশালে যোগ দেওয়ার চাপ থাকলেও যোগ দেন নি।

সম্মাননা[সম্পাদনা]

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস সম্পর্কে পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী বলেছেন, "কী পশ্চিম বাংলা কী বাংলাদেশ সবটা মেলালে তিনি শ্রেষ্ঠ লেখক।" লিখেছেন, "ইলিয়াস-এর পায়ের নখের তুল্য কিছু লিখতে পারলে আমি ধন্য হতাম।"[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ইমদাদুল হক মিলন বলেন: "গত ১৫-২০ বছরের মধ্যে তাঁর এ দু'টি উপন্যাস বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস।"[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ১৯৮৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান। ১৯৯৬ সালে আনন্দ পুরস্কারে ভূষিত হন।

সাংগঠনিক তৎপরতা[সম্পাদনা]

ইলিয়াস বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন বাঙলাদেশ লেখক শিবির এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

গ্রন্থতালিকা[সম্পাদনা]

উপন্যাস[সম্পাদনা]

ছোটগল্প সংকলন[সম্পাদনা]

প্রবন্ধ সংকলন[সম্পাদনা]

  • সংস্কৃতির ভাঙ্গা সেতু (১৯৯৮)

ছোট গল্প তালিকা[সম্পাদনা]

  • প্রেমের গপ্পো
  • রেইনকোট
  • জাল স্বপ্ন, স্বপ্নের জাল
  • ফোঁড়া
  • কান্না
  • নিরুদ্দেশ যাত্রা
  • যুগলবন্দি
  • ফেরারী
  • অপঘাত
  • পায়ের নিচে জল
  • দুধভাতে উৎপাত
  • সন্তু
  • ঈদ
  • মিলির হাতে স্টেনগান

অপ্রকাশিত লেখা[সম্পাদনা]

  • করতোয়া মাহাত্ম্য

[২]

পুরস্কার[সম্পাদনা]

তার কিছু কাজ অন্য ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং কিছু কাজের অনুবাদ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তার লেখা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছোটগল্প রেইনকোট অবলম্বনে মেঘমল্লার (২০১৫) চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছে। এছাড়া খোয়াবনামা উপন্যাস থেকে নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

১৯৯৬ সালের ১৩ জানুয়ারি আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ক্যান্সার ধরা পড়ে। রোগটি দেরিতে ধরা পড়ার কারণে তার অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। ওই বছরেরই ২০ মার্চ তার ক্যান্সার আক্রান্ত ডান পা-টি পুরোপুরিভাবে কেটে বাদ দিতে হয়। কিছুদিন ভুগে অবশেষে ক্যান্সারজনিত কারণেই তিনি ১৯৯৭ সালের ৪ঠা জানুয়ারি ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1.  bn.banglapedia.org/index.php?title=ইলিয়াস,_আখতারুজ্জামান
  2.  সেলিনা হোসেন ও নুরুল ইসলাম সম্পাদিত; বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান; ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭; পৃষ্ঠা- ৪৪৭।

ডাউনলোড লিংকঃ-

 

 

Post a Comment

0 Comments